‘ক্যানসার আক্রান্ত নারীদের অনেকে দারিদ্র্যের কারণে চিকিৎসা শেষ করতে পারেন না। আক্রান্তদের মাত্র ১১ দশমিক ২ শতাংশ রেডিয়েশন সেবা পান।’

দেশে অসংক্রামক রোগের মধ্যে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে বেশি মৃত্যু হচ্ছে। এমন বাস্তবতায়ও জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত ৮৫ শতাংশ নারীই পরীক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্মেলনের সার্ভিক্যাল ক্যানসারবিষয়ক এই গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজন হওয়া এই সম্মেলন ২৬ জানুয়ারি শুরু হয়। এর আয়োজক ছিল বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামসহ দেশি-বিদেশি ৩০টি প্রতিষ্ঠান।

সম্মেলনের সমাপনী দিনে শুক্রবার সার্ভিক্যাল ক্যানসারবিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিয়া হাসিন।

তিনি বলেন, ‘সারা দেশে সার্ভিক্যাল আক্রান্ত নারীদের ৮৫ শতাংশই স্ক্রিনিংয়ের বাইরে থেকে যাচ্ছে। আবার দারিদ্র্যের কারণে চিকিৎসা শেষ করতে পারেন না সার্ভিক্যাল ক্যানসারে আক্রান্ত নারীরা। এই ক্যানসারে আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ১১ দশমিক ২ শতাংশ রেডিয়েশন সেবা পান। এত অপ্রতুলতা সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে সার্ভিক্যাল ক্যানসার নির্মূলের টার্গেট রয়েছে সরকারের। গবেষণায় অংশ নেয়া বেশির ভাগই ছিলেন বিবাহিত নারী, যাদের অধিকাংশই ছিলেন ক্যানসার রোগী এবং তাদের শারীরিক সমস্যার প্রধান লক্ষণ ছিল ব্যথা।

সম্মেলনে স্ট্রোক নিয়ে আরেকটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন বিএসএমএমইউর নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুভাষ কান্তি।

তিনি বলেন, দেশের অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর অন্যতম কারণ স্ট্রোক। অথচ দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা অপ্রতুল। ঢাকায় মাত্র দুটি সরকারি ও পাঁচটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ট্রোক ব্যবস্থাপনার সুবিধা রয়েছে। স্ট্রোকে মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব কমাতে সারা দেশে এই সুবিধা চালুর তাগিদ দেন এই বিশেষজ্ঞ।

ডা. সুভাষ কান্তি বলেন, স্ট্রোকের প্রায় ৮৫ শতাংশ ইস্কেমিক এবং এটি জরুরি চিকিৎসার আওতাভুক্ত রোগ। আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে ইস্কেমিক স্ট্রোক ব্যবস্থাপনার দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। এ অবস্থায় সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্ট্রোক ব্যবস্থাপনা সুবিধা চালু করা উচিত।

এই সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো শারফুদ্দীন আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন বিএসএমএমইউর নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবু নাসের রিজভী।